মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে শেরেবাংলা নগর জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে সমরাস্ত্র প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার এ প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন।
বাংলাদেশ সেনা, নৌ এবং বিমান বাহিনীর অংশগ্রহণে এ সমরাস্ত্র প্রদর্শনী আগামী ২৫ মার্চ শনিবার রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ পরিদর্শন করবেন বলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
শেরেবাংলা নগর জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিআরের পরিচালক লে. কর্নেল মোহাম্মদ রাশিদুল হাসান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের কমান্ডার মোহাম্মদ শাহীন মুজিদ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর সৈয়দ মাসুদুর রহমান, নৌবাহিনীর কমান্ডার এম হুমায়ুন কবীর, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর উইং কমান্ডার মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ স্ব স্ব বাহিনীর প্রতিনিধি হিসেবে সমরাস্ত্র প্রদর্শনী বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সমরাস্ত্র প্রদর্শনী বৃহস্পতিবারসহ ২৬, ২৭ ও ২৯ মার্চ সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত এবং ২৪ মার্চ সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য খোলা থাকবে।
অপরদিকে ২৮ মার্চ সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত শুধু মাত্র সেনানিবাসস্থ স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী এবং সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের পরিবারবর্গের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
এ ছাড়া ২৯ মার্চ দুপুর ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত সর্বসাধারণসহ রাজধানীর স্কুল ও কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য সমরাস্ত্র প্রদর্শনী খোলা থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, সমরাস্ত্র প্রদর্শনীতে ৪৮টি স্টল রয়েছে। এরমধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩২টি, নৌবাহিনী ৬টি এবং বিমান বাহিনীর ৬টি স্টল।
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ, দেশগঠন এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সশস্ত্রবাহিনীর ভূমিকাসহ সাম্প্রতিক আধুনিকায়নের ওপর সম্মিলিত স্টল রয়েছে ৪টি। প্রদর্শনী এলাকায় পরিদর্শনের সময় কোনো প্রকার ব্যাগ বহন করা যাবে না বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
আইএসপিআরের পরিচালক লে. কর্নেল রাশিদুল হাসান বলেন, প্রদর্শনীতে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন প্রকার আধুনিক সমরাস্ত্র, সরঞ্জাম, প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নে আধুনিক সরঞ্জামাদি, নৌবাহিনীর অত্যাধুনিক যুদ্ধ জাহাজ বানৌজা বঙ্গবন্ধু ও সদ্য সংযোজিত সাবমেরিনের রেপ্লিকাসহ বিমান বাহিনীর বিভিন্ন প্রকার বিমান ও আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জামাদি প্রদর্শিত হচ্ছে।
তিনি জানান, প্রদর্শনীতে আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে ফ্লাই পাস্ট, প্যারা ড্রপিং, র্যাপলিং, আন আর্মড কম্ব্যাট, নৌবাহিনীর সোয়াডস, সম্মিলিত ব্যান্ড ও অর্কেষ্ট্রা, মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক প্রদর্শনী, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাঁথা বর্ণনা ইত্যাদি।
নৌবাহিনীর কমান্ডার এম. হুমায়ুন কবীর বলেন, এবারের সমরাস্ত্র প্রদর্শনীতে প্রথমবারের মত গণচীন থেকে কেনা সাবমেরিন জয়যাত্রা এবং নবযাত্রার মডেল স্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে ব্যবহৃত বিভিন্ন নেভিগেশনাল ইকুপমেন্ট, আন্ডার ওয়াটার ও এভাব ওয়াটার ইকুইপমেন্ট, নৌবাহিনীতে ব্যবহৃত গান ও মিসাইলের মডেল, নৌবাহিনীর পোষাক, জাহাজ মেরামতের ডকিং পদ্ধতির মডেল এবং আরএএস’র একটি মডেল দর্শনার্থীদের প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়েছে।
বিমান বাহিনীর উইং কমান্ডার মামুনুর রশিদ বলেন, এ প্রদর্শনীতে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ সামগ্রী স্টলে বিভিন্ন ধরনের মডেল যেমন বিমান, হেলিকপ্টার, রাডার, বিমানবন্দর ও টাওয়ার এবং আবহাওয়া সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি প্রদর্শিত হবে।
এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ স্টল, আকাশ প্রতিরক্ষা স্টল, সমরাস্ত্র আলোকচিত্র স্টল, তথ্য স্টল, বিমান, হেলিকপ্টার রক্ষণাবেক্ষণ স্টল থাকবে।
সেনাবাহিনীর মেজর সৈয়দ মাসুদুর রহমান বলেন, প্রদর্শনীতে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া, গোলন্দাজ এবং পদাতিক বাহিনীর বিভিন্ন প্রকার আধুনিক সমরাস্ত্র, ইঞ্জিনিয়ারস, সিগন্যালস, আর্মি মেডিকেল কোর, অর্ডন্যান্স এবং ইএমই কোরের বিভিন্ন সরঞ্জাম, প্যারা কমান্ডো আধুনিক সরঞ্জামাদি থাকবে। -বাসস।
পাঠকের মতামত: